Skip to main content

Posts

Showing posts from May, 2017

ক্যালিগ্রাফির সাথে পথচলা-1

ক্যালিগ্রাফির জন্য ট্রেডিশনাল কালি তৈরি : আপনি মধ্যপ্রাচ্যের অথবা আরব দেশগুলোতে নজর দিলে দেখবেন, একধরণের কালি ব্যবহার করা হয়, যেটা পরিবেশ বান্ধব, প্রাকৃতিক উপাদানে তৈরি এবং ক্যালিগ্রাফির জন্য বিশেষ উপযোগী। পশ্চিমা ক্যালিগ্রাফিতে রাসায়নিক উপাদানে তৈরি কালির ব্যাপক ব্যবহার হয়। প্রাচ্য ও পশ্চিমা কালির মধ্যে মূল পার্থক্য হচ্ছে, এক. পশ্চিমা কালির থেকে আরবি কালির স্থায়িত্ব ও উজ্জ্বলতা বেশি। এবং দুই. পশ্চিমা কালি কাগজে ব্যবহারের পর সেটা সংশোধন ও মুছে ফেলা যায় না এবং দীর্ঘ মেয়াদে কাগজের টেম্পার বা ধারণ ক্ষমতা বা গঠন প্রক্রিয়াকে নষ্ট করে দেয়। অন্যদিকে আরবি কালির ব্যবহার সহজ ও সংশোধনযোগ্য। এছাড়া কলম দিয়ে লেখার সময় কলমের মুভমেন্ট বা গতিপ্রকৃতি ফুটে ওঠে এবং বিশেষ সৌন্দর্য্যের সৃষ্টি করে। আমরা বাজারে এক্রিলিক অথবা ওয়াটার কালার বা পোস্টার কালার বিশেষ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে রঙিন কালি সহজে তৈরি করতে পারি। এটা আধা রাসায়নিক বলা যেতে পারে। ছাত্রদের জন্য এসব রঙ সহজলভ্য ও হাত পাকানোর জন্য ভাল। এছাড়া মশক বা অনুশীলন করার জন্য চাইনিজ বা ইন্ডিয়ান কালি ব্যবহার করা ভাল। আরবি কালি তৈরিতে ভুষা কালি, আরবি ...

আমার ফেলে আসা দিনগুলো-১

MOHAMMAD ABDUR RAHIM · SATURDAY, 13 FEBRUARY 2016 166 reads মাদ্রাসায় তখন এইটের বৃত্তির টাকা হাতে পেয়েছি। কিছু টাকা টিউশনি করেও হাতে জমেছে। এমনই শীতের শেষ সময়। পড়াশুনার কোন চাপ নেই। ইয়ার-দোস্তদের সাথে সারাদিন আড্ডা মেরে বেড়াই। খুলনার সবচেয়ে বড় মহল্লা টুটপাড়া। এই মহল্লার সর্বপশ্চিমে দোলখোলা বাজার। হাটাপথে আমার বাসা থেকে প্রায় ঘন্টাখানেকের পথ। বড় চাচার সাথে সেই বাজারে শৈশবে প্রায়ই যাওয়া হত। সেখানে ভাল চইঝাল আর মানকচু পাওয়া যেত। বাজারের একপ্রান্ত শহরের ভেতর মিশেছে, অন্যপ্রান্ত পূর্ব-পশ্চিম মূখী একটি গলিতে এসে দাড়িয়েছে। এই মোড়ের পাশে একটি পুরনো দোতলা পাকা ইমারত। আমার দোস্ত ও ক্লাসমেট জাকির এই বাড়ির ছেলে। তার আব্বা সোনার দোকানদার। জাকিরের তাই হাতখরচ নিয়ে চিন্তা নেই। এই যে তসবিরখানা আপনারা দেখছেন। এটার একটা শানে নযুল আছে। জাকির আর আমার একসাথে ফটো তোলার কোনো পরিকল্পনা ছিল না। কিন্তু একটা বিশেষ কারণে এই ফটো তোলা হয়েছিল। আপনারা হয়ত ধারণা করতে পারছেন না ... ঠিক কি ছিল সেই কারণ? এটা একটা ভাব দেখানো কিংবা ফুটানি দেখানো ছবি। ছবির ক্যাপশন হওয়া উচিত- এই যে আমরা কি সুন্দর ঘ...

এক গণহত্যার রাত শেষে..

6 May 2013 at 17:42 গভীর রাতে মুহুর্মুহু গুলী, বোমা বিস্ফোরণ আর আর্তচিৎকারে ধরমড়িয়ে জেগে উঠলাম। বাচ্চারা আতঙ্কিত, বাচ্চার মা ভীত-সন্ত্রস্ত গলায় বলল, দেশে কি যুদ্ধ লেগে গেছে! আমি কি করব বুঝতে পারছি না। এক বন্ধুকে ফোন দিলাম। আন রিচেবল রিপ্লাই পেলাম। আরেক জনকে রিং করলাম এক-দুই-তিন চতুর্থবারে সে ধরল। বললাম এত রাতে তারা কিছু শুনতে পাচ্ছে কিনা? সে অনেকটা আতঙ্কিত হয়ে বলল, দেশে কি যুদ্ধ লেগে গেল! টিভি দেখে বলল, ঢাকা নগরীতে সরকারী বাহিনীর অভিযান চলছে। হেফাজতে ইসলামীকে তাদের অবস্থান থেকে সরিয়ে দিতে এভাবে গুলী ও বোমা-গ্রেনেড চার্জ করছে নিরাপত্তা বাহিনী।  ক্রমশ পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিল। মনে হচ্ছিল এই বুঝি গুলী এসে ঘরে পড়ে। চারদিকে খই ফোটার মত গুলীর শব্দ। সাথে মুহুর্মূহু গ্রেনেড ফাটছে। আর আর্তচিৎকারের সাথে মাইকের গগনবিদারী শব্দে আমরা চরম আতঙ্কিত। বাচ্চারা পরস্পর জড়াজড়ি করে বসে আছে আর ক্ষণে ক্ষণে বোমার শব্দে কেপে উঠছে।  ধীরে ধীরে চারদিক শান্ত হয়ে এল। মাঝে মাঝে গুলীর শব্দ শোনা যাচ্ছে। মনে হচ্ছে ৭১ সালের ২৫ মার্চের কালো রাতে ফিরে এসেছি। জানালা দিয়ে শব্দের উৎসে...

আমার ফেলে আসা দিনগুলো- ২

পর্ব দুই ৮০ দশকের শেষ দিকের ঘটনা। শিশু একাডেমিতে মহাসমারোহে ছবি আকা আর সংস্কৃতিচর্চায় নিয়মিত অংশগ্রহণ করি। স্যার ইকবাল রোডের ইসলামিক ফাউন্ডেশনেও কেরাত-হামদ-নাত ইত্যাদি অনুষ্ঠান বাদ যায় না। শিশু একাডেমি ছিল পাইওনিয়ার গার্লস স্কুলের পাশে পুরাতন একটা ভবনে। পরে সেটা সোনাডাঙায় নিজস্ব ভবনে চলে যায়। খুলনা গল্লামারিতে তখন চারুকলা মাত্র শুরু হয়েছে। সেই চারুকলার অধ্যক্ষ আবুল কাশেম স্যার ছিলেন আমাদের আর্টের শিক্ষক। অবশ্য এর আগে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের লাইব্রেরিয়ান জামান স্যার আমাদের ছবি আকা শেখাতেন। জামান স্যার অ্যামেচার আর্টিস্ট ছিলেন। তাই আমাদের ছবিতে একটা ফোক ভাব থাকত। পারস্পেকটিভ, প্রোপোরশন ইত্যাদি ঠিক হত না। কাশেম স্যার এসে সেগুলো ঠিক করে দিলেন। ব্যস, আমাদের উন্নতি হল দেখার মত । যেখানে প্রতিযোগিতা, সেখানে বিজয় আর পুরস্কার লাভ করা ডাল-ভাত হয়ে গেল। একবার বরিশালে আন্ত:বিভাগ প্রতিযোগিতায় পেন্সিলস্কেচে বিভাগীয় পর্যায় কোয়ালিফাই করলাম। তখন অবশ্য জামান স্যার ছিলেন। ফলে প্রতিযোগিতায় দেয়া বিষয় আকতে গিয়ে বিপদে পড়লাম। জামান স্যার আমাদের ছোট কাগজে ছবি আকা শেখাতেন, সেটা এ-৪ সাইজ ছিল।...

আমার শৈশবের শবে-বরাত

খুলনা শহরের শান্ত নিরিবিলি এলাকা টুটপাড়ায় আমার শৈশবের দিনগুলো হেসে-খেলে গুজরান করেছি। তখনকার মনে দাগকাটা স্মৃতিগুলো সময়ে-অসময়ে মনের পর্দায় ভেসে ওঠে। আমাদের পাড়ায় যে বিশালায়তনের কবরখানাটি আছে। সেটা খুলনা শহরের সবচেয়ে প্রাচীন এবং বিচিত্র রূপে বাধানো সেখানকার কবরগুলো। নতুন আর পুরাতন অংশ দক্ষিণ-উত্তরে বিভক্ত। বিচিত্র রঙ আর ধরণের ফুলে ভরা পুরা কবরগাহ। প্রতি শবে-বরাত আর শবে-কদরের রাতে হাজার হাজার মানুষ সেখানে জিয়ারতের জন্য আসে। বিশেষকরে শবে-বরাত আসলেই সারা শহর ে যেন একটা পবিত্র আবেশ ছড়িয়ে পড়ত। দলে দলে লোকেরা পান্জাবি-টুপি পরে মসজিদে ভরে যেত। আসরের পর মিলাদ-দোয়ার অনুষ্ঠান হত। ঘরে ঘরে রুটি-হালুয়া তৈরি হত। গ্রাম থেকে কেউ আসলে বলত- রুটির দিন। সেইদিন আচানকভাবে ভিক্ষুকে ভরে যেত শহর। মনে হত আসমান থেকে সব আজব চেহারা আর পোশাক, ঝোলা-পাত্র, লাল সুতায় মোড়ানো লাঠি নিয়ে ভিক্ষুকেরা নেমে এসেছে। তারা বাড়ি বাড়ি ঘুরে আকর্ষণীয় সুরে এবং বিভিন্ন ভাষায় রুটি-হালুয়ার আবেদন করছে, মা-চাচিরা সেইদিন দিল উজাড় করে খাবার দান করতেন। আর তশতরিতে নকশাদার কাপড়ে ঢেকে নানান পদের হালুয়া-ফিরনি আর চালের আটার পাতলা রুটি প্রতিবেশ...